ক্রমেই বাড়ছে সারাবিশ্বের জনসংখ্যা। তবে বাড়ছে না জমি। অন্যদিকে, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে কমছে ফসল উৎপাদন। ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার খাদ্যচাহিদা মেটাতে তাই বিভিন্ন বিকল্পের কথা ভাবছেন বিজ্ঞানীরা। সেই প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে এবার গরুর মাংস এবং ধানের সমন্বয়ে নতুন এক ধরনের হাইব্রিড খাদ্য উদ্ভাবন করেছেন দক্ষিণ কোরিয়ার বিজ্ঞানীরা। গোলাপি রঙের এই খাবারটিকে বিজ্ঞানীরা বলছেন, মাংসযুক্ত চাল। 555
সম্প্রতি বিজ্ঞান সাময়িকী ম্যাটারে এ বিষয়ক একটি গবেষণা প্রকাশিত হয়েছে। এতে বলা হয়, গবেষণাগারে উদ্ভাবিত খাবারটি দেখতে মাংসের কিমা ও ভাতের এক অদ্ভুত সংমিশ্রণের মতো। ধানের ভেতরে গরুর মাংসের সমন্বয়ে এই হাইব্রিড খাদ্য তৈরি করা হয়েছে।
গবেষণায় নেতৃত্ব দিয়েছেন দক্ষিণ কোরিয়ার ইয়নসি বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োমোলিকুলার ইঞ্জিনিয়ার সোহেয়ন পার্ক। বিজ্ঞান বিষয়ক ওয়েবসাইট সায়েন্স অ্যালার্টকে গবেষণাটি সম্পর্কে তিনি বলেন, “কোষ-কালচারড প্রোটিন চাল থেকে মানুষের প্রয়োজনীয় সব পুষ্টি চাহিদা মেটানোর কথা ভাবার সময় এসেছে। ভাতে এমনিতেই উচ্চমাত্রায় পুষ্টি উপাদান রয়েছে। তবে প্রাণিসম্পদ থেকে কোষ যুক্ত করে এই পুষ্টি উপাদানকে আরও বাড়িয়ে তোলা যায়।”
মাংসযুক্ত চাল সম্পর্কে তিনি আরও বলেন, “এই খাদ্য তৈরি কিছুটা শ্রমসাধ্য। তবে এটিই একদিন খাবারের ওপর চাপ কমাতে পারে।” 555
গবেষকেরা বলেছেন, এই চাল দামে সস্তা, এবং মাংসের নিরাপদ এবং টেকসই পরিবেশসম্মত বিকল্প হতে পারে। জলবায়ু সংকটের মধ্যে একটা বদল আনতে পারে এই চাল।
জানা গেছে, এই গবেষণার জন্য বিজ্ঞানীরা প্রথমে ধানের দানার ওপর মাছের জেলটিন এবং এনজাইমের প্রলেপ দেন যাতে কোষগুলো সেলুলার উপাদানের পরিমাণ বাড়াতে পারে এবং চালের ভেতরে থাকতে পারে। এরপর তারা গরুর পেশী এবং চর্বিযুক্ত স্টেম সেল যুক্ত করে ১১ দিনের জন্য ধান একটি পেট্রি ডিশের ভেতরে রেখে দেন। 555
এরপর দলটি ধানের গঠন এবং পুষ্টি উপাদান নিয়ে পরীক্ষা করেন। তারা দেখতে পান, গরুর মাংস এবং চালের মিশ্রণে তৈরি হাইব্রিড খাবারটি নিয়মিত সাধারণ চালের চেয়ে শক্ত। তারা জানান, নতুন চালে উল্লেখযোগ্যভাবে নিয়মিত চালের তুলনায় ৮% বেশি প্রোটিন এবং ৭% বেশি চর্বি রয়েছে।
ttt